নাকের এলার্জি থেকে মুক্তির উপায়


নাকের এলার্জি থেকে মুক্তির উপায় সম্পর্কিত ব্লগে আপনাকে স্বাগতম। এই ব্লগটিতে এলার্জি সম্পর্কিত বিস্তারিত আলোচনা করা থাকবে। আপনিও যদি এলার্জিজনিত সমস্যায় ভুগে থাকেন তাহলে পুরো লেখাটি পড়তে থাকুন, আশা করি আপনি এই ব্লগের মাধ্যমে আপনার সমস্যা থেকে মুক্তির উপায় খুঁজে পাবেন। চলুন তবে শুরু করা যাক । 

শীতকালে মানুষের মধ্যে যে সমস্যাগুলো সবচেয়ে বেশি দেখা যায় তার মধ্যে সর্দি-কাশি অন্যতম। তবে অনেক মানুষেরই শীতে বা গরমে এলার্জি দেখা যায়। এই এলার্জিগুলোর বেশিরভাগই হয় ডাস্ট এলার্জি এবং খাবারজনিত এলার্জি।খাবারজনিত এলার্জি হলে শরীরে গোটা গোটা হয় এবং সারা শরীর চুলকায়। অন্যদিকে ডাস্ট এলার্জি হলে বারবার হাঁচি পড়তে থাকে যার ফলে একটা বিরক্তিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। নাকে এলার্জি হলে মানুষের সামনে বারবার হাঁচি করলে অপ্রীতিকর অবস্থার মধ্যে পড়তে হয়। এই ব্লগটিতে আপনারা নাকের এলার্জি থেকে মুক্তির সকল উপায় সমূহ জানতে পারবেন। 

সূচিপত্রঃ 

 নাকের এলার্জি কেন হয়ঃ
মানুষের পঞ্চ ইন্দ্রিয়ের মধ্যে অন্যতম একটি হলো নাক। পঞ্চ ইন্দ্রিয়ের একটি কোন কারণে সমস্যা হলে মানুষের চলতে সমস্যা হয়, নাক ও এর ব্যতিক্রম নয়। নাকের সাহায্যে আমরা যেমন ঘ্রাণ নিয়ে থাকি তেমনি নাকের সাহায্যে আমরা আমাদের শ্বাস প্রশ্বাসও সম্পন্ন করে থাকি যা আমাদের বেঁচে থাকার প্রধান একটি কারণ।
নাকের এলার্জি বছরের যে কোন সময় হতে পারে। নাকের এলার্জি হওয়ার বেশ কিছু কারণ রয়েছে। যেমনঃ
  • জিনগত কারণে
  • অপুষ্টি বা পুষ্টিহীনতা হলে
  • কোন খাদ্যে এলার্জি থাকলে
  • ধুলাবালির উপস্থিতিতে
  • হরমোন জনিত সমস্যার কারণে
  • ধোঁয়া জাতীয় কিছু থাকলে

 নাকের এলার্জির লক্ষণঃ 
নাকের এলার্জি মানুষের জন্য খুবই বিরক্তি কর  একটি বিষয়। নাকের অ্যালার্জি হলে কিছু লক্ষণ দেখা যায়। যেমনঃ 
  • প্রচুর পরিমাণে হাঁচি হওয়া
  • অনেক সময় মাথা ব্যথা করা
  • নাকের আশে পাশের মাংস গুলি একটু ফুলে বড় হয়ে যাওয়া
  • নাকে চুলকানি হওয়া
  • নাক দিয়ে তরল পানি পড়া
  • একটানা অনবরত বেশ কয়েকটি হাঁচি পড়া
  • নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া ইত্যাদি। 

নাকের এলার্জির ঔষধের নামঃ
নাকে এলার্জি হলে সেটা যদি অতিমাত্রায় বেড়ে যায় তাহলে ঘরে না থেকে ডক্টরের পরামর্শ নেওয়া উচিত। ওষুধ দিয়েই এ রোগের চিকিৎসা হয়ে যায় । তবে কিছু ক্ষেত্রে অপারেশনের প্রয়োজন হতে পারে। যেসব ঔষধের মাধ্যমে এই রোগ সারানো যায় সেগুলো হলোঃ 
অ্যান্টিহিস্টামিন বা অ্যালার্জি জাতীয় ঔষধ দিনে দুইবার বা তিনবার সেবন করা হয়, কিছু ক্ষেত্রে একবারও দেওয়া হয়। 
স্টেরয়েড জাতীয় স্প্রে নাকে ব্যবহার করা হয়। তবে এটি দীর্ঘমেয়াদী এবং দিনে দুইবার দেয়া হয়। 
ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সংক্রমিত হলে অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োজন হয়। 
নাকের মাংস বড় হয়ে গেলে অপারেশনের মাধ্যমে কেটে সোজা করতে হয়।
নাকের পলিপ হলে ফেম করা যেতে পারে। 

নাকের এলার্জি দূর করার হোমিওপ্যাথি উপায়ঃ 
নাকের এলার্জি থেকে মুক্তির উপায়ে এর জন্য অনেক সময় হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা করা হয়। হোমিওপ্যাথি চিকিৎসায় নাকের এলার্জি থেকে মুক্তির কয়েকটি উপায় পাওয়া যায়। যে ঔষধ গুলো দিয়ে নাকের এলার্জি থেকে মুক্তি পাওয়া যায় সেগুলো হলঃ 
এডেল-২০ঃ এই জার্মান ওষুধটিতে বিভিন্ন ধরনের হোমিওপ্যাথি ঔষধ মেশানো রয়েছে। যেমনঃ
আইলান্থাস গ্লান্ডু লাস ৪ এক্স - এটি ইনফেকশন প্রতিরোধে সাহায্য করে থাকে। ইনফেকশনের কারণে যদি নাকে এলার্জি হয় তাহলে এই ওষুধটি তা প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।
কমক্লেদিয়া ৬ এক্স - এটি চোখ জ্বলা, চোখের চুলকানি, চামড়ার চুলকানি প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।
ইউ ফ্রেশিয়া ৪ এক্স - এটি চোখের জলন, চোখের পানি ঝরা, নাকের জলন, নাকের পানি ঝরা, নাকের অ্যালার্জি দূর করতে সাহায্য করে।
গ্রাটিওলা ৪ এক্স - যদি পেটের গন্ডগোলের কারণে এলার্জি হয়ে থাকে তাহলে এটি দূর করতে সাহায্য করে ।
যুগলান ৪ এক্স - এটি চামড়ার এলার্জি দূর করতে সাহায্য করে এবং হজম বৃদ্ধি করে। 
উকুবাকা ৪এক্স- এটি ফ্লু এবং ইনফেকশন জনিত কারণে এলার্জি হলে তা প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।
সারসা প্যারিলা ৮ এক্স - এটি আমাদের শরীরের বিষাক্ত পদার্থ বের করে দিতে সাহায্য করে এবং এটি চোখের এলার্জি, নাকের অ্যালার্জি এবং সাথে যদি সাইনোসাইটিস হয়ে থাকে তার ক্ষেত্রেও এই ওষুধটি কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। 
তেরস্কাম ১২ এক্স - এটি আমাদের লিভার, কিডনির কাজকে সক্রিয় করে এবং শরীরের বিষাক্ত পদার্থ বের করে এলার্জি নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে থাকে।
এই সমস্ত হোমিওপ্যাথিক ঔষধ দিয়ে এডেল টুয়েন্টি হোমিওপ্যাথিক কম্বিনেশন ওষুধটি তৈরি করা হয়। এটি খাবার নিয়ম হলো চায়ের কাপের এক কাপের চার ভাগের এক ভাগ পানিতে ২০ ফোঁটা মিশিয়ে তিন দিনে তিনবার খাবার তিরিশ মিনিট পূর্বে খেতে হবে এবং ছোটরা ১০ ফাটা করে দিনে তিনবার খাবে। 

এলার্জি সর্দি থেকে মুক্তির উপায়ঃ 
বাংলাদেশে বেশিরভাগ মানুষ এখন এই সমস্যায় ভোগে কিন্তু অনেকেই জানে না এখান থেকে পরিত্রাণের উপায় কি। এমনকি আমিও এই সমস্যার ভুক্তভোগী। তাই নিজ অভিজ্ঞতা এবং গবেষণা সহ এখানে নাকের এলার্জি থেকে মুক্তির উপায় গুলো আলোচনা করা হয়েছে।  এলার্জি সর্দি থেকে মুক্তির উপায় গুলো হলোঃ
বৃষ্টির আগে এবং বৃষ্টির পরে এলার্জিজনিত ভাইরাস বেশি থাকায় এই সময়ের দিকে বাইরে না থাকাই ভালো।
গরম পানিতে নাক দিয়ে ভাত নেওয়া যেতে পারে সেই সাথে মেন্থল নেওয়া যেতে পারে এবং ন্যাজাল স্প্রে সাময়িকভাবে কিছুটা ব্যবহার করা যেতে পারে। 
বালিশের কাভার নিজের কাপড় চোপড় এবং যেসব জিনিস এই ভাইরাসের সংস্পর্শে আসে সেগুলোকে গরম পানি দিয়ে ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে। 

ডাস্ট এলার্জি থেকে মুক্তির উপায়ঃ 
ডাস্ট এলার্জি হল মূলত ধুলাবালিজনিত এলার্জি। এই সমস্যায় যারা ভোগে তাদের জন্য এই এলার্জি থেকে একটি পাওয়া কিছুটা কঠিন। ডাস্ট এলার্জি থেকে মুক্তি পেতে হলে ধুলাবালি সম্পন্ন জায়গা থেকে দূরে থাকতে হবে। এছাড়াও বাইরে বের হলে মাস্ক পরিধান করতে হবে। সব সময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন জায়গায় বসবাস করতে হবে। এগুলো নিয়মিত মানতে পারলে এই এলার্জি থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। কোন কারনে অতিরিক্ত এলার্জির সমস্যা দেখা গেলে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত। 

নাক চুলকালে কি হয় ইসলাম কি বলেঃ 
ইসলামে নাক চুলকানো কোন বিশেষ সমস্যার মধ্যে পড়ে না। এটি খুবই সাধারণ একটি  রোগ। ইসলাম কুসংস্কার এবং শির্ক সমর্থন করেনা। তাই নাক চুলকানোর সাথে এসবের কোন সম্পর্ক নেই। গ্রামের অনেক বয়স্ক লোকেরা নাক চুলকানোকে অনেক সময় বিভিন্ন ধরনের কুসংস্কারের মাধ্যমে ব্যাখ্যা করে থাকে যেগুলো সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। 

নাকের অ্যালার্জি থেকে মুক্তির ঘরোয়া উপায়ঃ 
এলার্জিজনিত সমস্যা থেকে চিরতরে মুক্তি পাওয়া সম্ভব নয়। তবে এগুলো থেকে কিছুটা মুক্তি পাওয়া যেতে পারে। আমার ব্যক্তিগত সমস্যা থেকে আমি যা যা মুক্তি পাবার উপায় বুঝতে পেরেছি এবং গবেষণা করে যেসব উপায় গুলো পেয়েছি সেগুলো হলোঃ 
একটা হাড়িতে পানি গরম করে কোন তোয়ালে বা গামছা দিয়ে মাথা সম্পূর্ণ ঢেকে হাঁড়ির উপরে মাথা রেখে ভাপ নিলে নাকের এলার্জি থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
বাড়িঘর এবং অফিস আদালত সব সময় পরিষ্কার পরিপাটি রাখলে নাকের এলার্জি কম হয়। 
বাইরে বের হওয়ার সময় মাস্ক পড়ে বের হলে এই সমস্যাটি থেকে কিছুটা নিস্তার পাওয়া যায়।
কুসুম গরম পানি দিয়ে গড়গড়া করলে আরাম পাওয়া যায়। 
চা, কফি বা গরম দুধ খেলে স্বস্তি পাওয়া যায়।
  

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

Md. Abir Hossain
Md. Abir Hossain
একজন ডিজিটাল মার্কেটিং এক্সপার্ট ও অর্ডিনারি আইটির সিনিয়র সাপোর্ট ইঞ্জিনিয়ার। তিনি অনলাইন ইনকাম, ব্লগিং, SEO ও টেকনোলজি নিয়ে নিয়মিত লেখালেখি করেন। ৫ বছরের অভিজ্ঞতায় তিনি শিক্ষার্থীদের অনলাইনে সফল হতে সহায়তা করে যাচ্ছেন।