শীতকালে মুখের চামড়া উঠলে করণীয়
শীতকালে মুখের চামড়া উঠলে করণীয় সম্পর্কিত ব্লগে আপনাকে স্বাগতম। শুরু করা যাক, ষড়ঋতুর দেশ এ বাংলাদেশ এ দেশে ছয়টি ঋতুর মধ্যে শীত ঋতুর আগমন ঘটে অগ্রহায়নের শেষের দিকে এবং এটি বিস্তৃত থাকে দু'মাস ব্যাপী। অনেক সময় শীতকালে তীব্রতা অনেক বেশি হয় এবং অনেক সময় কম।
যেহেতু বর্তমানে দীর্ঘ সময় বাংলাদেশে গরমকাল অবস্থান করে তাই শীত আসলে হঠাৎ শরীরে বিভিন্ন পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। শীতকালে ত্বকের যত্নে বিভিন্ন উপায় অবলম্বন করা হয়ে থাকে ।এ ব্লগ টিতে সেগুলো বিস্তারিত বর্ণনা করার আছে।
সূচিপত্র
- শীতকালে আবহাওয়া যেমন থাকে
- ঠান্ডা পরলে ত্বকে যে সব পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়
- শীতে মুখের খসখসে ভাব দূর করতে করণীয়
- শীতকালে ঠোঁট ফেটে যাওয়ার কারণ ও প্রতিকার
- শীতে মুখে চামড়া উঠলে করণীয়
- শীতে ত্বকের যত্নে যেসব প্রসাধনী ব্যবহার করা যেতে পারে
- শেষ কথা
শীতকালে আবহাওয়া যেমন থাকে
সুজলা সুফলা শ্যামলা এই দেশের যেমন রয়েছে মনোমুগ্ধকর অপার সৌন্দর্য তেমনি রয়েছে বৈচিত্রতা। এদেশের মানুষ যেমন বৈচিত্র্যময় তেমনি এদেশের আবহাওয়া অনেক বিচিত্র।
বাংলাদেশের আবহাওয়ার উপর নির্ভর করে এ দেশে ঋতুকে ছয়টি ভাগে ভাগ করা হয়। সেগুলো হলোঃ গ্রীষ্ম ,বর্ষা, শরৎ, হেমন্ত, শীত ও বসন্ত ।প্রতিটি ঋতুর বৈশিষ্ট্য আলাদা। শীতকালে বাংলাদেশের আবহাওয়া শুরুতে কিছুটা আদ্র এবং উষ্ণ থাকে।
শীত পড়ার আগে থেকে কিছুদিন ঠান্ডা বাতাস সহ বৃষ্টিপাত হয়ে থাকে। যার ফলে
আবহাওয়া এই সময় কিছুটা শুষ্ক হয়। কিন্তু দিনের বেলায় গরমের প্রকোপ লক্ষ্য করা
যায়। শীতের মাঝে মাঝে সময়ের দিকে আবহাওয়া অনেক বেশি আর্দ্র থাকে,
যার ফলে শরীরের চামড়া শুষ্ক হয়ে যায় এবং ফাটতে শুরু করে। শীতের শেষের দিকে শুষ্কতা ধীরে ধীরে কমতে থাকে এবং উষ্ণতা বৃদ্ধি পায়।
ঠান্ডা পড়লে শরীরের ত্বকে যে সব পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়
শীতকালে শরীরের অনেক পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। এর মধ্যে ত্বক এর পরিবর্তন সবচেয়ে
বেশি লক্ষণীয়। কারণ শীতকালে আবহাওয়া শুষ্ক থাকায় পরিবেশ আমাদের শরীর থেকে পানি
টেনে নেয়। যার ফলে আমাদের ত্বকের এপিডারমিসে পানি শূন্যতা হয় এবং ত্বক অতিরিক্ত শুষ্ক হয়ে ফেটে যেতে শুরু করে। এগুলো ছাড়াও হাত পায়ের চামড়াও শুষ্ক
হতে দেখা যায়। অনেকের পায়ের গোড়ালিও ফাটতে থাকে।
শীতে মুখের খসখসে ভাব দূর করতে করণীয়
শীতকালে আবহাওয়া শুষ্ক ও আর্দ্র হয়। আমাদের মুখের ত্বক শুষ্ক হতে শুরু করে। এই সময়
আমাদের মুখে যত্ন না নিলে ত্বকের অনেক ক্ষতি হতে পারে। জানলে অবাক হবেন! আমাদের
দেশের অধিকাংশ মানুষই শীতে ত্বকের যত্নে উদাসীন। আপনিও যেন সেই কাতারে না থাকেন
তাই ব্লগ সম্পূর্ণ পড়ুন এবং নিজের শরীরের যত্ন নিন। শীতকালে মুখ শুষ্ক হয়ে
যাওয়ায় এটি খসখসে হয়ে যাওয়া খুবই স্বাভাবিক। এ অবস্থায় মুখের যত্নে ব্যবহার করা
যেতে পারে একটি ভালো মানের মশ্চারাইজার ক্রিম অথবা জয়তুনের তেল বা অলীভ অয়েল। এটি আমাদের মুখের শুষ্ক ভাব দূর করতে সাহায্য করে এবং দীর্ঘ সময় পানি ধরে রাখে। এর
ফলে পরিবেশ ত্বক থেকে পানি বাইরে টেনে নিতে পারেনা। অনেক সময় মুখে এমন অবস্থায় তেল ও মশ্চারাইজার ক্রিম সবচেয়ে বেশি কার্যকর।
শীতকালের ঠোঁট ফেটে যাওয়ার কারণ ও প্রতিকার
বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশের শীতের প্রকোপ না থাকলেও এদেশের আবহাওয়া অনুযায়ী এ অল্পমাত্রার শীত ও আমাদের কাছে বেশি মনে হয়। শীতকালে শরীরের পরিবর্তনের মধ্যে অন্যতম হলো ঠোঁট ফেটে যাওয়া। ঠোঁট ফেটে যাওয়ার কারণ হলো মূলত শুদ্ধ আবহাওয়া। এটি আমাদের শরীরের বিভিন্ন জায়গা থেকে পানি শোষণ করে। ফেলে যার কারণে ঠোঁটে পানি শূন্যতা দেখা যায় এবং ফাটতে শুরু করে।
এমতাবস্থায় করনীয় হল,একটি ভালো মানের লিপ বাম ব্যবহার করা। ঠোঁটে নিয়মিত ভেসলিন বা এজাতীয় ক্রিম ব্যবহার করা। ঠোঁট বারবার জিব্বা দিয়ে না ভেজানো। এটি করলে আরো বেশি ফাটতে থাকে। মুখে বা ঠোঁটে পানি লাগলে তারপরে এটি শুকানোর আগেই ঠোঁটের আদ্রতা রক্ষাকারী ক্রিম ব্যবহার করা। ঠোঁট শুকিয়ে গেলে বারবার এটি প্রয়োগ করা।
শীতে মুখের চামড়া উঠলে করণীয়
শীতকালে মুখে ত্বক সবচেয়ে বেশি শুষ্ক হয়ে যায়। এ সময় মুখে সাদা তুলোর মত দেখা যায়। যার ফলে লোক সম্মুখে বিড়ম্বনার মুখে পড়তে হয়। অনেকেরই শীতকালে অতিরিক্ত শুষ্ক হয়ে মুখের চামড়া পর্যন্ত উঠে যেতে শুরু করে। পাশাপাশি মুখে যত্ন একটু বেশি ভালোভাবে নেওয়া প্রয়োজন। কারণ শরীরের অন্য সব অংশের তুলনায় মুখের ত্বক বেশি পাতলা ও সংবেদনশীল হয়ে থাকে।
মুখে চামড়া উঠলে যা যা করা যেতে পারে সেগুলো হলঃ
- প্রথমত একটি ভালো মশ্চারাইজার ক্রিম ব্যবহার করা
- দ্বিতীয়তঃ ক্রিম দীর্ঘ সময় ত্বকে সুরক্ষা দিতে না পারলে জয়তুনের তেল ব্যবহার করা
- তৃতীয়ত ও এগুলো ব্যবহার কোনো উপকারিতা না পেলে একটি ভালো চর্মরোগ বিশেষজ্ঞকে দেখানো
শীতে ত্বকের যত্নে যেসব প্রসাধনী ব্যবহার করা যেতে পারে
শীতকালে শিশু থেকে বৃদ্ধ সকলেরই ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়। যার কারণে এই সময়টিতে ত্বকের বিশেষ যত্ন নেওয়া প্রয়োজন। শিশুদের জন্য সবচেয়ে ভালো হয় প্রাকৃতিক কোন কিছু ব্যবহার করলে। যেমনঃ অলিভ অয়েল। তবে এটি ছাড়াও অন্যান্য অনেক কেমিক্যাল মিশ্রিত প্রসাধনী পাওয়া যায় সেগুলো বাজারে বেবি লোশন, বেবি ক্রিম হিসেবে কিনতে পাওয়া যায়।
বড়দের জন্য যেসব প্রসাধনী ব্যবহার করা যেতে পারে সেগুলো হলঃ
- জয়তুনের তেল
- হায়ালুরনিক এসিড আছে এমন কিছু মশ্চারাইজার ক্রিম
- গ্লিসারিন যুক্ত সাবান
- লিপ বাম বা লিপ অয়েল ইত্যাদি
শেষ কথাঃ
শীতকাল বাংলাদেশে অনেক উপভোগ্য একটি ঋতু হলেও এই সময় মানুষের শরীরে কিছুটা ভিন্ন
প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা যায়। শীতকালে মানুষের শরীরের ত্বক অতিরিক্ত শুষ্ক হয়ে থাকে। তাই ফেটে যেতে শুরু করে। যার ফলে এই সময়ে শরীরের ভালোভাবে যত্ন নিতে হয়। সব সময় মনে
রাখতে হবে বেশি সমস্যা হলে অবশ্যই ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া প্রয়োজন।

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url