শীতকালে গরম পানি দিয়ে গোসল করা উচিত কি না

নাকের এলার্জি থেকে সহজেই মুক্তির উপায় আপনি কি শীতকালে গরম পানি দিয়ে গোসল করা উচিত কি না এটি সম্পর্কে জানতে চান? আপনার জন্যই তবে এই আর্টিকেলটি। প্রিয় পাঠক!  শীত তো চলেই এলো! এখনো কি পুরনো বছরের মতো বেশি ঠান্ডায় গোসল না করার চিন্তা করছেন। একটু জানুন! 

শীতের মৌসুমে গোসল করা যেন একটি যুদ্ধ করা। ঠান্ডার মধ্যে গোসল করা একটি ভয়ের মতো। তবে শীতকালে গরম পানি দিয়ে গোসল করা উচিত কি না তা জানলে এটি সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাবে। চলুন তবে জেনে নিই। 

পোস্ট সূচীপত্রঃ শীতকালে গরম পানি দিয়ে গোসল করা উচিত কি না

• শীতকালে গরম পানি দিয়ে গোসল করা উচিত কি না
• শীতের সময় গোসল না করলে কি হবে
• একটানা কয়দিন গোসল না করে থাকা যায়
• গোসলের জন্য ঠান্ডা পানি ভালো নাকি গরম পানি
• শীতকালে গরম পানি দিয়ে গোসল করলে ক্ষতি হবে কিনা
• গোসলের সময় কি করলে ঠান্ডা কম লাগবে 
• শেষকথাঃশীতকালে গরম পানি দিয়ে গোসল করা উচিত কি না

শীতকালে গরম পানি দিয়ে গোসল করা উচিত কি না

শীতকালে গোসল করাটা যেমন একটা যুদ্ধ ঠিক তেমনি সকলের মনে প্রশ্ন জাগে শীতকালে গরম পানি দিয়ে গোসল করা উচিত কি না? নাকি ঠান্ডা পানি দিয়েই গোসল করতে হবে? এই প্রশ্ন গুলো যেমন যুক্তিযুক্ত তেমনই এর উত্তরও যুক্তিযুক্ত।  একজন মানুষকে গরম পানি দিয়ে গোসল করা উচিত নাকি ঠান্ডা পানি দিয়ে, এই দ্বিধাদ্বন্দে আশা করি আর ভুগবেন না! 

প্রথমত মানুষ স্বভাবতই আরামপ্রিয়।  মানুষ তার সুখের জন্য অনেক কিছুই করে থাকে। গোসল করার ক্ষেত্রেও ভিন্ন কিছু নয়৷ নিজের আরামের জন্য যা দরকার তাই করে থাকে। যার ফলে অনেকেই প্রতিনিয়ত গরম পানি দয়ে গোসল করে থাকে,  যার ফল সবসময় ভালো হয় না। চলুন তবে জেনে নিই শীতকালে গরম পানি দিয়ে গোসল করা উচিত কি না। 

শীতকালে আবহাওয়া অনেক বেশি শুষ্ক থাকায় আমাদের জন্য গোসল করার সময় গরম পানি ব্যবহারে ত্বক আরও বেশি শুষ্ক হয়ে যেতে পারে। তবে বেশি ঠান্ডা পানি দিয়ে গোসল করলে পেশি সংকুচিত হয়ে যায়, ফুসফুসের সমস্যা দেখা যেতে পারে, যাদের হার্টের সমস্যা আছে তাদের হার্ট অ্যাটাক ও হতে পারে।

আবার বেশি গরম পানি মানুষের মাথার চুলে খুশকি বৃদ্ধি করে,  শরীরের ত্বক শুষ্ক করে দেয়।  গরম পানি চর্মরোগের সমস্যাও বৃদ্ধি করতে পারে। তবে যেতেতু শীতকালে পরিবেশ অনেক ঠান্ডা থাকে তাই কিছুটা উষ্ণ বা কুসুম গরম পানি ব্যবহার করা সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ হবে। 

শীতকালে গরম পানি দিয়ে গোসল করা উচিত কি না এবার সেটা জেনে নিই৷ মূলত শীতকালে তাপমাত্রা ১৪ থেকে ২৫ ডিগ্রির মধ্যে থাকে, কখনো বেশি কখনো কম। এই তাপমাত্রায় গরম পানি দিয়ে গোসল না করে কুসুম গরম পানি বা উষ্ণ পানি ব্যবহার করতে হবে। যেটির তাপমাত্রা ৩২-৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।  

এই তাপমাত্রার পানি দিয়ে গোসল করলে শরীরে অনেক উপকার হয়৷ এগুলোর মধ্যে কিছু হলোঃ 

• শরীরের পেশি প্রসারিত হয়
• রক্তসঞ্চালন বৃদ্ধি পায়
• শরীরের ব্যথা দূর করতে সাহায্য করে
• সর্দিকাশি, গলাব্যথা দূর করে ইত্যাদি। 

তবে বেশি গরম পানি শরীরের জন্য ক্ষতিকর।  গরম পানি দিয়ে মাথা ধুলে মাথায় পরবর্তীতে খুশকি হতে পারে এবং চুলের গোড়া দূর্বল হয়ে যায়৷ ফলে চুল পড়ে যেতে পারে। বেশি গরম পানি দিয়ে গোসল করলে ত্বক অতিরিক্ত শুষ্ক হয়ে যায়।  তাই চামড়া দ্রুত কুঁচকে যেতে পারে।

গরম পানি আমাদের শরীরের জন্য ক্ষতিকর হলেও কুসুম গরম পানি আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী। আমাদের শরীরের উপকারের জন্য শীতকালে কুসুম গরম পানি সবচেয়ে ভালো। ঠান্ডা পানিই বরং ক্ষতিকর। 

শীতের সময় গোসল না করলে কি হবে

শীত হোক বা গ্রীষ্ম একজন মানুষের উচিত প্রতিদিন অন্ততপক্ষে ১ বার করে গোসল করা। কারণ এতে করে শরীর ও মন দুটোই ভালো থাকে৷ একজন মানুষের সুস্হ থাকতে হলে প্রতিদিন গোসল করতেই হবে। তা না হলে শরীরে বিভিন্ন রোগ বাসা বাঁধতে থাকবে। 

বিশেষ করে শীতের সময় শরীরে অনেক কাপড় চোপড় থাকায় ঘামলেও সেটি শরীরেই চেপে থাকে।আর সেটি না ধুয়ে সেভাবেই রেখে দিলে শরীরে বিভিন্ন রোগ বাসা বাঁধতে পারে। তাই নিজের শরীরের যত্ন নিতে হলে এবং নিজেকে সুস্থ রাখতে হলে প্রতিদিন গোসল করা অনেক বেশি জরুরি। 

গোসল না করলে শরীরে বিভিন্ন ধরনের রোগ বাসা বাঁধতে পারে।  সেই সাথে অপরিষ্কার শরীর থেকে বাজে গন্ধ ও আসে৷ নিজেকে সুন্দর ও পরিপাটি রাখতে হলে তাই প্রতিদিন গোসল করা উচিত।  সেটি শীত হোক অথবা গ্রীষ্ম। তাই প্রতিদিন একবার হলেও গোসল করা উচিত।  

একটানা কয়দিন গোসল না করে থাকা যায়

গোসল করা প্রতিটি মানুষের জন্য প্রয়োজনীয়।  একজন মানুষের প্রতিদিন একবার হলেও গোসল করা উচিত।  কেননা এটি মানুষকে সম্পূর্ণভাবে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকতে সাহায্য করে। এটা কি ভাবা যায়! যে একজন মানুষ দিনের পর দিন গোসল না করে আছে? 

আসলেও এমনটা হয়। মানুষ বেশি আরামপ্রিয় হওয়ায় গোসল না করেও থাকে অনেকদিন। যা মানুষের স্বাস্হ্যের পক্ষেও ক্ষতিকর।  নিজেদের কিছু সময়ের অলসতার জন্য গোসল না করে থাকা একদমই উচিত নয়। 

তবে কিছু ক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী গোসল না করে থাকতে হয়। সেটি ভিন্ন কথা। কিন্তু একজন সাধারণ মানুষের জন্য প্রতিদিন গোসল করা প্রয়োজন।  তবে গোসল না করে ২/১ দিন থাকলে তেমন কোনো সমস্যা হয় না। কিন্তু গোসল না করে থাকা একদমই উচিত নয়। 

গোসলের জন্য ঠান্ডা পানি ভালো নাকি গরম পানি

ঠান্ডা পানি আমাদের স্বাহ্যের জন্য অনেকে অনেক সময় উপকারী মনে করলেও এটি আসলে সব সময় আমাদের জন্য উপকারী হয় না। তবে গরম পানিও অনেকেই শরীরের জন্য ভালো মনে করে থাকেন। সেটিও আসলে আমাদের শরীরের জন্য ভালো নয়। 

গোসলের জন্য সবচেয়ে ভালো হলো কুসুম গরম পানি।  এটি দিয়ে গোসল করলে শরীর সবচেয়ে বেশি ভালো থাকে। ঠান্ডা পানিও আমাদের শরীরের জন্য উপকারী,  তবে এটি শুধু গরমের সময় ব্যবহারের জন্য। তাছাড়া গরম পানি এবং ঠান্ডা পানি  দুটোই স্বাহ্যের পক্ষে ক্ষতিকর।  

শীতকালে গরম পানি দিয়ে গোসল করলে ক্ষতি হবে কিনা

শীতকালে গরম পানি দিয়ে গোসল করা উচিত কি না এটি অনেকের মনেই প্রশ্ন থাকে। তবে এটি জানা আমাদের সকলের জন্য খুবই প্রয়োজনীয়। একজন মানুষের উচিত প্রতিদিন অন্ততপক্ষে ১ বার গোসল করা।তবে কেমন তাপমাত্রার পানি দিয়ে গোসল করবেন? এটি জানা জরুরি।  

শীতে গরম পানি আমাদের জন্য খুবই আরামদায়ক।।কারণ এটি আমাদের ঠান্ডার কষ্ট দূর করে দেয়। তবে গোসলের সময় গরম পানি ব্যবহার করলে ক্ষতি হয় কিনা এটিও জানা প্রয়োজন।  শীতকালে গরম পানি দিয়ে গোসল করলে যেসব সমস্যা হতে পারে সেগুলো হলোঃ 

1. প্রথমত শরীরে গরম পানি লাগলে জ্বালাপোড়া হতে পারে
2. দ্বিতীয়ত গরম পানি মাথায় ব্যবহারে চুলে খুশকি হতে পারে। 
3. তৃতীয়ত গরম পানি শরীরের পেশিগুলোকে শিথিল কটে দেয়। 

গোসলের সময় কি করলে ঠান্ডা কম লাগবে

গোসলের সময় ঠান্ডা লাগা খুবই স্বাভাবিক একটি বিষয়। তবে ঠান্ডা দূর করার কিছু উপায় আছে। গোসলের সময় সরাসরি মাথায় পানি না দিয়ে আগে হাতে পায়ে পানি দিলে ঠান্ডা কম লাগে। গোসলের আগে শরীরে তেল ম্যাসাজ করলে ঠান্ডা লাগে না এবং এটি অনেক উপকারী শরীরের জন্য।  

এছাড়াও গোসলের কিছুক্ষণ আগে শরীরচর্চা করলে গরম লাগে, যার ফলে গোসলের সময় আর ঠান্ডা লাগে না। এই পদ্ধতিগুলোর একটি মেনে চললে গোসলের সময় ঠান্ডা লাগার সম্ভাবনা নেই৷ 

শেষকথাঃশীতকালে গরম পানি দিয়ে গোসল করা উচিত কি না

সম্পূর্ণ আর্টিকেল পড়ে আপনি নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন শীতকালে গরম পানি দিয়ে গোসল করা উচিত কি না। এটি আসলে করা একদমই উচিত না বরং কুসুম গরম পানি দিয়ে গোসল করা প্রয়োজন। এটি আমাদের শরীর ও মন দুটোই ভালো রাখে।